❏ প্রত্যেকে কিনতে পারবেন দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি ও পাঁচ কেজি চাল
মাসিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার থেকে ভর্তুকি মূল্যে জুন মাসের পণ্য বিক্রি শুরু করতে যাচ্ছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এ মাসে দেশব্যাপী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের ভোক্তার কাছে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এবার বিক্রি কার্যক্রমে এক কার্ডধারী সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি ও পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারবেন। এবার প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা, চিনি ৭০ টাকা ও প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকায় বিক্রি করবে টিসিবি। এ বিক্রয় কার্যক্রম ডিলারদের দোকান/নির্ধারিত স্থায়ী স্থাপনা হতে সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ও তাদের নির্ধারিত তারিখ ও সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিচালনা করবে। রোববার এ বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। মিরপুর পল্লবী এলাকায় শেখ ফজলুল হক মনি খেলার মাঠে সকালে এ কার্যক্রম উদ্বোধন হবে।
এদিকে নানা অজুহাতে কোরবানি ঈদের আগেই অস্থির হয়ে ওঠেছে রাজধানীর মসলার বাজার। দাম বাড়ছে আদা, রসুন, পেঁয়াজ, জিরা ও এলাচসহ প্রায় প্রতিটি মসলার। পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি দুই সপ্তাহের কিছু বেশি সময়। এ সময় সাধারণত প্রতিবছরই বাড়ে মসলার চাহিদা। এটিকে পুঁজি করেই বাজারে বাড়ছে মসলার দাম। অবশ্য ভারত থেকে আমদানি কম হওয়ার অজুহাতে গত দুমাস ধরেই দেশের বাজারে এলাচসহ বিভিন্ন মসলার দাম লাগামহীন।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সবশেষ তথ্য বলছে, গত এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম যথাক্রমে ২১.০৯ শতাংশ, ১৩.৫১ শতাংশ ও ৪.৩৫ শতাংশ বেড়েছে। আর জিরা ও এলাচের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৬.৬৭ ও ২০ শতাংশ। শুক্রবার কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এবং রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২৩০-২৪০ টাকা, আর আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে আদা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়।
এছাড়া, বাজারে দারুচিনি ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা, জিরা ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, এলাচ প্রকারভেদে ৩২০০ থেকে ৩৬০০ টাকা, গোলমরিচ ৮৮০ থেকে ৯০০ টাকা, লবঙ্গ ১৬০০ থেকে ১৬৫০ টাকা, তেজপাতা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শুকনো মরিচ মানভেদে ৩৮০ থেকে ৪৩০ টাকা, আলুবোখারা ৯৯০ টাকা, কাজুবাদাম ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা ও ধনিয়া ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
তাদের দাবি, কোরবানি ঈদের তো আরও বাকি, এর মধ্যেই ব্যবসায়ীরা মসলার দাম দাম বাড়িয়ে ফেলেছেন, যা নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে ক্রেতাদের। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ার ফলে আমদানি কমায় মসলার দাম বেড়েছে পাইকারি বাজারগুলোতে। ফলে দাম বাড়ছে খুচরা বাজারেও। আমদানি না বাড়লে ঈদে দাম আরও বাড়তে পারে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা রাকিব জানান, ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি পর্যায়ে খরচ বেড়ে গেছে। যে কারণে সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি অমর কান্তি দাশ বলেন, দেশের জিরা ও এলাচের বাজার ভারতের ওপর নির্ভরশীল। ভারতেই বর্তমানে এসব পণ্যের সংকট চলছে। তার প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি রাইসা মাহবুব বলেন, দেশে মসলার বাজার আমদানির ওপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি দেশে বেড়ে গেছে ডলারের দাম। তাই প্রভাব পড়েছে এর দামেও।
উল্লেখ্য, গত ৮ মে প্রতি ডলারের দাম ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ১১০ টাকা।