বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার নয়, গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক যৌথ প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন। প্রতিবাদ সভাটির আয়োজন করেছে সম্পাদক পরিষদ এবং নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি জানি না আমরা এই মুহূর্তে কোন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আছি। আমার বয়স ৭৮। সারা জীবন সংগ্রাম করেছি। একটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দেখবো বলে। আজ যে বাংলাদেশ দেখছি, এ বাংলাদেশের স্বপ্ন আমি কোনোদিন দেখিনি।
তিনি বলেন, আমার স্বাধীনভাবে চিন্তা করার যে অধিকার, আমার কথা বলার যে অধিকার তার ওপর আবার আঘাত এসেছে, জুলাই যুদ্ধের ওপর আঘাত এসেছে। জুলাই যুদ্ধ ছিল এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। আজ সেই জায়গায় আঘাত এসেছে। তাই আমার অনুরোধ, কোনও রাজনৈতিক চিন্তা নয়, দল নয়, সব গণতন্ত্রকামী মানুষের এক হওয়ার সময় এসেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যারা অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে চাই, আমরা যারা আমাদের বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে চাই, তাদের শুধু সচেতন হলে চলবে না, রুখে দাঁড়াতে হবে। এখন রুখে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আপনাদের আহ্বান জানাবো, এখানে এসে শুধু একাত্মতা ঘোষণা নয়, মানববন্ধন করে সংহতি প্রকাশ করা নয়, আজ সর্বক্ষেত্রে সর্বশক্তি নিয়ে আপনারা যারা বাংলাদেশকে ভালবাসেন তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ হন, এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হওয়া মব ভায়োলেন্সের সঙ্গে সরকারের একটি অংশের সমর্থন আছে, রাজনৈতিক সমর্থন আছে, এছাড়া এটি করা সম্ভব হতো না।
নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, পৃথিবীর সব জায়গায় সংবাদ মাধ্যমের নিজস্ব সম্পাদকীয় নীতি থাকে, সে নীতি পছন্দ না হলে গণমাধ্যমে আগুন লাগিয়ে দেওয়া কোনও গণতন্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়।
ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ডেইলি স্টার প্রথম ও আলোর সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ওইদিন ২৬-২৭ জন স্টাফ ভবনের ভেতরে আটকে ছিল, ফায়ার সার্ভিসকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য শুধু ভবনে আগুন দেওয়া ছিল না, হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল।
প্রতিবাদ সভায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে, মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে তাদের শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তারা।
প্রতিবাদ সভায় আরও ছিলেন– নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ, দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিবেদক | বাংলাবাজার পত্রিকা.কম


















