শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

হিমোগ্লোবিন বাড়ে যেসব খাবারে!

হিমোগ্লোবিন বাড়ে যেসব খাবারে!

ইদানিং অনেককেই দেখা যায় রক্তে হিমোগ্লোবিন স্বল্পতায় ভুগছেন। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পর ভয়ও পান কেউ কেউ। তবে জানেন কি সাধারণত আমাদের নিয়মিত কিছু খাবারেই হতে পারে এর সমাধান।

ভিটামিন বা আয়রন পিল না নিয়ে খাবার খেয়েই রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানো যায়। সাধারণত যেসব খাবার হিমোগ্লোবিন বাড়ায় তা আমাদের চারপাশেই রয়েছে। ঔষধের কিছু না কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকেই, কিন্তু প্রাকৃতিক খাবারের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া একেবারেই নেই।

রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার ফলে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হই আমরা। বিশেষ করে রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়, শারীরিক দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়, মাথা ব্যথা করে, মাথা ঘোরে, হার্টবিট বেড়ে যায় এবং অনেক সময় হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে।

তাই আমাদের সুস্থ থাকতে হলে রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে হিমোগ্লোবিনের বিকল্প নেই। যেসব খাবারে হিমোগ্লোবিন পাওয়া যায় নিচে দেয়া হলো-

মাংস: রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দ্রুত বাড়াতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত প্রাণিজ প্রোটিন। সকল ধরনের লাল মাংস; যেমন গরুর মাংস, খাসির মাংস এবং কলিজা আয়রনের সবচেয়ে ভালো উৎসগুলোর একটি।

আয়রন হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের জন্য জরুরি। মুরগির মাংস লাল মাংস না হলেও তাও দেহকে বিশাল পরিমাণে আয়রন সরবরাহ করতে পারে।

ফল: সবধরনের রসালো সাইট্রাস ফল, যেমন, আম, লেবু এবং কমলা ভিটামিন সি-র সবচেয়ে ভালো উৎস। আর দেহে আয়রন দ্রুত শুষে নেওয়ার জন্য ভিটামিন সি সবচেয়ে জরুরি।

এর ফলে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের গতিও বাড়ে। স্ট্রবেরি, আপেল, তরমুজ, পেয়ারা এবং বেদানাতেও প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে।

সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছে আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ পুষ্টি উপাদান আছে প্রচুর পরিমাণে। সুতরাং অ্যানিমিয়া বা রক্তশুন্যতার রোগীদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছসহ বিভিন্ন প্রকার খাদ্য রাখতে হবে।

দানাদার খাদ্য: সয়াবিন, ছোলা এবং দানাজাতীয় খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। সয়াবিন বর্তমানে সবজিভোজীদের জনপ্রিয় একটি খাদ্য। এ থেকে সুস্বাদু সব খাবার তৈরি হয় এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় দ্রুতগতিতে।

পুর্ণশস্যজাতীয় খাদ্য: চাল, গম, বার্লি এবং ওটস রক্তশুন্যতায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য চমৎকার আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। এসব খাবার প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেটসও সরবরাহ করে। লাল চাল বিশেষ করে সব বয়সীদের জন্যই আয়রনের একটি সমৃদ্ধ উৎস বলে গণ্য হয়।

সবজি: প্রতিদিন তাজা সবজি খেলে আয়রন ও অন্যান্য খনিজ পুষ্টি এবং নানা ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি মিটবে। আলু, ব্রকলি, টমেটো, কুমড়া এবং বিটরুট আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সক্ষম। এছাড়া স্পিনাক সহ অন্যান্য সবজিও বেশ আয়রন সমৃদ্ধ।

ডিম: ডিম হলো আরেকটি জনপ্রিয় খাদ্য যাতে আছে উচ্চমাত্রার আয়রন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। ডিমের হলুদ কুসুমে আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পুষ্টি এবং ভিটামিন। আর এ কারণেই দুর্বল লোকদেরকে প্রতিদিন সেদ্ধ ডিম খেতে বলা হয়।

শুকনো ফল: কিসমিস এবং খেজুরে আছে প্রচুর আয়রন, ভিটামিন এবং আঁশ। এসব খাবার খেলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও বাড়ে দ্রুতগতিতে।

বাদাম: যে কোনো ধরনের বাদামই মানবদেহের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হয়। যে কারণে তরুণদেরকে কাজু বাদাম, চীনা বাদাম এবং আখরোট খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ে দ্রুতগতিতে।

ডার্ক চকোলেট: শিশুদের প্রিয় খাবার ডার্ক চকোলেটেও থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আর এ কারণেই এমনকি ডাক্তাররাও ডার্ক চকোলেট খেতে বলে।

এই সবগুলো খাদ্যই দেহে আয়রনের ঘাটতি মিটিয়ে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দ্রুতগতিতে বাড়ায়। তবে বেশি পরিমানে খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। সুতরাং সুস্থ্য থাকুন, ভালো থাকুন।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ