শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি

নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি

গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে নেপালে। শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশের পর এবার আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়েছেন সেখানকার জেন-জিরা। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন নেপালের কমিউনিস্ট প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। সরকারের প্রায় সব মন্ত্রীই হয় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, নয়তো আত্মগোপনে আছেন। এ অবস্থায় অস্থির নেপালের শাসনভার কার কাঁধে উঠছে, এ নিয়ে চলছিল বিস্তর জল্পনা-কল্পনা।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নাম। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত তাকেই নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ঘোষণা করা হয়েছে। 

আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতেই শপথ নিতে পারেন তিনি। খবর এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডের।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেন-জি বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌদেল এবং সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে ঐকমত্যের পর সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌদেলের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল জানান, শুক্রবার সকাল থেকে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় শীতল নিবাসে ব্যাপক আলোচনার পর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে একটি সমঝোতা হয়।

এই পদক্ষেপ জেন-জি বিক্ষোভকারীদের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। পোখরেল আরও জানান, কার্কি আজ রাত ৯টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এর মধ্য দিয়ে নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন সুশীলা কার্কি। তার নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি ছোট মন্ত্রিসভার থাকবে এবং আজ শুক্রবার রাতেই প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রিসভা পার্লামেন্টের পাশাপাশি সাতটি প্রাদেশিক পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার সুপারিশ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

 

রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের মুখে গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) কেপি শর্মা ওলির সরকার পতনের পর নেপালে স্থিতিশীলতা ফেরাতে জেন–জিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে সেনাবাহিনী। নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবেন, তা নিয়ে চলে আলোচনা। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা আলোচনার পর জেন-জি শিক্ষার্থীরা সুশীলার নাম প্রস্তাব করেন।

 

তবে সুশীলা কার্কির বয়স নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির একজন সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কুলমান ঘিসিং-এর নাম প্রস্তাব করে আন্দোলনকারীদের একাংশ। কাঠমান্ডুর মেয়র ৩৫ বছর বয়সি র‍্যাপার-রাজনীতিবিদ বলেন্দ্র শাহকেও প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

 

তবে বেশিরভাগ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় বলেন্দ্র শাহ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সুশীলা কার্কির প্রতি সমর্থন জানান। শেষ পর্যন্ত বর্ষীয়ান সুশীলা কার্কির ওপর আস্থা রাখছেন জেন-জি বিক্ষোভকারীরা।  

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ