ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই অন্যরকম উত্তেজনা। তবে এবারের এশিয়া কাপে চেনা সেই উন্মাদনার ছবি অনেকটাই ফিকে। অপারেশন সিঁদুরের পর এই ম্যাচ ঘিরে দ্বিধাবিভক্ত সাবেক ক্রিকেটাররা। পেহেলগাম জঙ্গি হামলার মতো ঘটনার পরও কেন পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত খেলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ম্যাচ ‘বয়কট’ করার কথাও বলছেন কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের শুধু খেলা নিয়ে ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর।
এশিয়া কাপের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে এবার উত্তেজনার চাইতে অস্বস্তি বেশি। এই ম্যাচ ঘিরে নানা মতামত সূর্যকুমার যাদব, শুভমান গিলদের কানেও পৌঁছেছে। স্বাভাবিকভাবেই খানিকটা চাপে রয়েছেন তারা। মাঠের আবহ কেমন থাকবে, তা আগেভাগে আন্দাজ করা কঠিন। পেহেলগাম ঘটনার সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ বন্ধ করার পক্ষে কথা বলেছিলেন গম্ভীরও। তবে তিনিই ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে এখন ‘নিরুপায়।’ এদিকে ভারতের ড্রেসিংরুমে অস্বস্তিকর পরিবেশের কথা স্বীকার করেছেন দলের অন্যতম সহকারী কোচ রায়ান টেন ডেসকাট।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডেসকাট বলেছেন, ‘এই ম্যাচ ঘিরে সমর্থকদের আবেগ আমরা বুঝি। আমাদের কোচের বার্তা খুব পেশাদার এবং পরিষ্কার। গম্ভীর বলেছে, যেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, সেটা নিয়ে কিছু ভাবারও দরকার নেই। অধিকাংশ ভারতবাসীর মনোভাব, অনুভূতি ক্রিকেটারদের অজানা নয়। ওদের অনুভূতিও খুব একটা আলাদা নয়। একটা সময় পর্যন্ত এশিয়া কাপই অনিশ্চিত ছিল। সকলে অপেক্ষায় ছিলাম। তবে সরকারের অবস্থান সকলেরই জানা।’
ডেসকাট আরও বলেন, ‘আমরা ক্রিকেটের মধ্যে আবেগ মেশাতে চাইছি না। ছেলেরা যথেষ্ট পেশাদার। বিষয়টা খুবই সংবেদনশীল। কিছু পরিস্থিতিতে ব্যক্তিবিশেষের আলাদা আলাদা অনুভূতি থাকা স্বাভাবিক। আমরা ক্রিকেটারদের বলেছি, শুধু খেলায় মন দিতে। ক্রিকেট ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে না ভাবতে।’ সূত্রের খবর, ক্রিকেটারদের সঙ্গে গম্ভীর নিজে কথা বলেছেন। সাজঘরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন। আর এটা শুধুই একটা ম্যাচ হিসেবে দেখার বার্তা দিয়েছেন।
কোচ না ভাবার পরামর্শ দিলেও ক্রিকেটারদের পক্ষে চোখ-কান বন্ধ করে রাখা সম্ভব নয়। ভারতীয় দলের অনেক ক্রিকেটারই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথেষ্ট সক্রিয়। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে নানা নেতিবাচক বিষয় তাদের চোখেও পড়ছে। বিতর্ক এড়াতে কেউ মুখ খুলছেন না ঠিকই। তবে পুরোপুরি নিশ্চিন্তও থাকতে পারছেন না অনেকে। এই ম্যাচের পর ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে, সেটাই তাদের সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে।