মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
বাংলাবাজার পত্রিকা.কম গুমের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল তেল আবিব, মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি, চলতি পথেই থেমে গেল ট্রেন বাংলাবাজার পত্রিকা.কম তেহরানে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ দূতাবাস বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে ইসরায়েলের হামলা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ১১৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য দ্রুত ইসিকে জানাতে বললেন সালাহউদ্দিন বাংলাবাজার পত্রিকা.কম নিজ দলের নারী কর্মীকে কুপ্রস্তাব এনসিপি নেতার, অডিও ফাঁস! বাংলাবাজার পত্রিকা.কম ধেয়ে আসছে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ‘রিমঝিম’, তিন বিভাগে বন্যার শঙ্কা বাংলাবাজার পত্রিকা.কম হাসিনা-কামালকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত

দালালের খপ্পরে পড়ে  রাশিয়া গিয়ে চাকরির নামে রুশ বাহিনীর হয়ে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে অংশ নিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মোহাম্মদ আকরাম হোসেন নামে এক যুবক । 

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এক সহযোদ্ধার ফোনে পরিবারের কাছে আকরামের নিহত হওয়ার খবর পৌঁছলে তার বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে।

জানা গেছে, ওয়েল্ডারের কাজ শিখে সংসারের সচ্ছলতা আর নিজের ভবিষ্যতের আশায় রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন উপজেলার লালপুর হোসেনপুর গ্রামের মোরশেদ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (২৫)। তিন ভাই ও দুই বোনসহ পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে আকরাম ছিল সবার বড়। আকরামদের সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী দিন মজুর পিতা মোরশেদ মিয়া স্ত্রী, পূত্র ও কন্যা নিয়ে কোনরকমে দিনাতিপাত করছিলেন। এরই মধ্যে আকরামের একজন বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন আকরামের বাবা মোরশেদ। এ অবস্থায় ওয়েল্ডারের কাজ শিখিয়ে আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় বিগত প্রায় এগারো মাস আগে আকরামকে রাশিয়া পাঠানো হয়। রাশিয়ায় যাবার পর বিগত আট মাস সেখানকার একটি চায়না কোম্পানীতে ওয়েল্ডার হিসেবে চাকরি করে আকরাম। বেতন খুব বেশী না পেলেও তার উপার্জনে পরিবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে। ফলে মোরশেদ মিয়ার অসচ্ছল পরিবারটি সচ্ছলতার স্বপ্ন বুনতে থাকে রাশিয়ায় প্রবাসী আকরামকে নিয়ে। কিন্তু বিগত আড়াই মাস আগে আকরাম দালালের প্রলোভনে পড়ে রুশ সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হয়ে অংশ নেন ইউক্রেন যুদ্ধে। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবিও নিজের ফেসবুকে আপলোড করেছিলেন তিনি। কিন্তু ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার স্বপ্নের যাত্রা।

এদিকে  আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া জানান, কোম্পানিতে ভালো বেতন না পাওয়ায় দালালদের প্রলোভনে পড়ে বিগত আড়াই মাস আগে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে আকরাম যোগ দেন রুশ সেনাবাহিনীতে। শর্ত ছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সম্মুখসারিতে থাকার। এতে পরিবারের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হলে আকরাম জানিয়েছেন তার আর ফিরে আসার উপায় নেই। এরই মধ্যে আকরাম বাবাকে জানিয়েছিলেন তার রাশিয়ার ব্যাংক একাউন্টে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে।

আকরামের মা মোবিনা বেগম জানান, যুদ্ধ চলাকালে ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হলেও গত ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আকরামের । রাশিয়ায় অবস্থানর পরিচিতজনরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) তার এক সহযোদ্ধা ফোন করে জানান, যুদ্ধে গিয়ে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর মিসাইল হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। ফোনে জানানো হয় আকরামের ইউনিটের কয়েকজন যোদ্ধা ইউক্রেন বাহিনীর মিসাইল হামলায় মারা গেছেন। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আকরামের পরিণতিও একই হয়েছে বলে তাদের ধারণা।


আকরামের মৃত্যুর খবরে তার বাড়ি আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছেলের ছবি নিয়ে মা মোবিনা বেগম বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। শোকে হতবিহবল পরিবারের অন্য সমস্যরা।


নিহতের লাশ দেশে আনতে ও ক্ষতিপূরণ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছেন পরিবারের সদস্যরা।



আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধে আশুগঞ্জের যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি অবগত হয়েছি। নিহতের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ