কবি আল মাহমুদ আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান পুরুষ। বিশ-শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে আবির্ভূত এ কবির ৯০তম জন্মদিন আজ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করা এই কিংবদন্তি কবি আল মাহমুদ। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তর হয়ে রক্তক্ষয়ী জুলাই গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লবী এ পথপরিক্রমায় যার কবিতা মুক্তিকামী গণমানুষকে প্রাণিত করেছে। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি ও প্রার্থনার সৌধ তিনি।
২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও, তার সাহিত্যকর্ম তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে অমরত্বে। একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্পকার, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক হিসেবে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন আপন মহিমায়।
কবি আল মাহমুদের ৯০ তম জন্মদিন উপলক্ষে পৃথক আয়োজনে দিনটি পালন করবেন ভক্ত-অনুরাগীরা।
এদিন বিকেল ৪টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কবিকে ঘিরে আলোচনা, স্মরণ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কালের কলস ও কালের ধ্বনি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিল্প-সাহিত্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
একই দিন সকালে ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ, ময়মনসিংহে আয়োজন করেছে ‘আমাদের আল মাহমুদ’ শীর্ষক সেমিনার।
বাংলা একাডেমি সূত্র জানিয়েছে, কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জুলাইতে বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হবে। তবে দিন-তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। আর ১২ জুলাই, শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ভবনে বিকেল ৪টায় কবিতা, স্মৃতিচারণ ও আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে।
কবি আল মাহমুদের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে। কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাই স্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হাই স্কুলে পড়ালেখা করেন। মূলত এ সময় থেকেই তার লেখালেখি শুরু। সংবাদপত্রে লেখালেখির সূত্র ধরে ১৯৫৪ সালে আল মাহমুদ ঢাকায় চলে আসেন।
আল মাহমুদের প্রকৃত নাম মীর আব্দুস শুকুর আল মাহমুদ। কবির প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে, লোক লোকান্তর, কালের কলস, সোনালী কাবিন, মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, আরব্য রজনীর রাজহাঁস, বখতিয়ারের ঘোড়া, অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না, দিনযাপন, দ্বিতীয় ভাঙন, একটি পাখি লেজঝোলা, পাখির কাছে ফুলের কাছে, আল মাহমুদের গল্প।এ কবি বাংলাকাব্যে অনবদ্য বহুমাত্রিকতার সৃজনশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য দেশের জাতীয় পদকসহ বেশ কয়েকটি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন।
সেগুলো হলো- বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, জয়বাংলা পুরস্কার, হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, ফররুখ স্মৃতি পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কার, সুফী মোতাহের হোসেন সাহিত্য স্বর্ণপদক, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, সমান্তরাল (ভারত) কর্তৃক ভানুসিংহ সম্মাননা পদক, লেখিকা সংঘ পুরস্কার, হরফ সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশু সাহিত্য পুরস্কার, নতুনগতি পুরস্কার ইত্যাদি।