বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত। ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়া পর থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। এ সময়ের মধ্যে শহীদ হন লাখ লাখ বীর বাঙালি। একাত্তরের ৪ ডিসেম্বর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর আসতে থাকে। ডিসেম্বরের এদিন দখলদারমুক্ত হয়— দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, দামুড়হুদা, জীবননগর,
বকশীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুরসহ আরও কিছু এলাকা। ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধ এক ভিন্নমাত্রা পেতে শুরু করে। বর্ষা, শরৎ আর হেমন্ত পেরিয়ে শুরু হয় শীতের মৌসুম। গ্রাম-বাংলাজুড়ে শীত নামে। কিন্তু শীত নেই মুক্তিকামী বীর বাঙালির। হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করতে দেহের রক্ত যেন টগবগিয়ে ফুটছে। একাত্তরের রক্তঝরা এই দিনে চারদিকে বীর বাঙালির বিজয়, আর পাকহানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর। দেশের বিভিন্ন স্থানে পর্যুদস্ত হতে থাকে উর্দুভাষী হানাদাররা।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলমুক্ত হতে থাকে। সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে আকাশে-বাতাসে সর্বত্র। সেই বিজয়ের বার্তা যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের করে তোলে আরও দুর্বার, অপ্রতিরোধ্য। ১৯৭১-এর এদিন থেকেই শুরু হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক যুদ্ধ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তারা মরণপণ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সঙ্গে রয়েছে ভারতীয় মিত্রবাহিনী। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী চারদিক দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করতে থাকে।