শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫

ফেনীতে ভিড় বাড়ছে আশ্রয়কেন্দ্রে, কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত

ফেনীতে ভিড় বাড়ছে আশ্রয়কেন্দ্রে, কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত

বৃষ্টি কমায় ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কমেছে নদ-নদীর পানি। জেলার অনেক জায়গা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু এলাকা। পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় দুর্গত মানুষজনের ভিড় বেড়েছে।

সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ স্বেচ্ছাসেবক দলের লোকজন উদ্ধার তৎপরতা ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। ফেনী বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে ও ঢাকা চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে যোগাযোগ অনেকটা চালু হয়েছে। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চলাচল করছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য  মতে, ফেনীর বন্যা কবলিত পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া (আংশিক), ফেনী সদর (আংশিক) ও দাগনভূঞা (আংশিক) উপজেলার ১০৯টি গ্রামের জনগণের দুর্ভোগ কমাতে সকল অংশীজনের সহযোগিতায় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে ঘোষিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ৮২টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৯ হাজার ২০০ মানুষ অবস্থান করছেন। তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খাদ্য ও অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও মজুদ রয়েছে। কোন এলাকায় সহায়তা পৌঁছাতে দেরি হলে কিংবা না পৌঁছালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত তিন দিনে সীমান্তবর্তী মুহুরী, কহুয়া, সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ফুলগাজী ও পরশুরাম অংশের ২০টি স্থান ভেঙে দুই উপজেলার ২৭ গ্রাম প্লাবিত হয়। এর মধ্যে পরশুরাম উপজেলায় বেড়িবাঁধের ১২টি অংশ ও ফুলগাজী উপজেলার ৮টি অংশ ধসে পড়ে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। তবে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা থেকে পানি কিছুটা কমলেও নতুন করে ছাগলনাইয়া ও সদর উপজেলার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে  বুধবার  রাত পর্যন্ত পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ৩১ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিলেন। 

বৃহস্পতিবার সারাদিন বন্যার্তদের জন্য মানবিক সহায়তা ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবকগণ।

পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় দুর্যোগে সবচেয়ে নাজুক গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ ১৮ জনকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়েছে।  

এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল রাখতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। জনগণের নিরাপত্তা বিধানে যে সকল এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে তা বন্যার পানি বিপৎসীমার নিচে নামলেই সচল করা হবে। এ বিষয়ে ধৈর্যের সঙ্গে সহযোগিতা করার অনুরোধ করছি। 

ফেনীতে বন্যার পানিতে কারেন্ট জালে জড়িয়ে নুরুল আলম (৬২) নামে এক বৃদ্ধের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্দুয়া দৌলতপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলম ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক কমান্ডারের ছেলে।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিয়া ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ