বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪

মাথা নত করি না বলে চক্রান্ত বেশি: শেখ হাসিনা

মাথা নত করি না বলে চক্রান্ত বেশি: শেখ হাসিনা

❏ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না

আসন্ন নির্বাচন ঘিরে অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দেয়নি, তাদের চক্রান্ত থেমে যায়নি। আর যেহেতু তারা জানে কারও কাছে আমরা মাথা নত করি না, সেজন্য চক্রান্ত আরও বেশি। কথাগুলো বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে নির্বাচনী বিশাল জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টি আসনে জয়লাভ করে। আর এই বিএনপি বড় বড় কথা বলে, লম্পঝম্প করে, তারা পেয়েছিল মাত্র ৩০টি সিট। যে কারণে তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করে নিজেদের মধ্যে গোলমাল করে সরে যায়।

তিনি বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জনগণ আমাদের ক্ষমতায় এনেছে। বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা ক্ষমতায় আছি বলে বাংলাদেশ আজকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আজকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠিয়েছি, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি। আমরা বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আজকে মাত্র সোয়া দুই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে ফরিদপুর চলে এসেছি। আগে লঞ্চে-স্টিমারে করে অনেক সময় লাগতো।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধু নৌকা মার্কা ভোট পেলে আমি সরকারে আসতে পারব। আর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়তে পারব। বাংলাদেশ কখনও পিছিয়ে যাবে না। এর আগে, দুপুর ১টা ৮ মিনিটে কোরআন তেলাওয়াত, গীতা ও বাইবেল পাঠের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। এরপর সম্মিলিতভাবে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। পরে বক্তব্য শুরু করেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা।

জনসভায় উপস্থিত ছিলেন মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মাগুরা, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার সব আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

নৌকার প্রার্থীদের জন্য ভোট প্রত্যাশা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই নৌকা আপনাদের স্বাধীনতা দিয়েছে। এ নৌকাই পারবে মানুষকে উন্নত জীবন দিতে, শান্তি-সমৃদ্ধি দিতে। এই নৌকায় আপনারা ভোট দিয়েছিলেন বলেই আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকায় ভোট দেবেন। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যই আজকের নির্বাচন। কাজেই এই নির্বাচনে ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করবেন। আপনার ভোট আপনি রক্ষা করবেন আর অগ্নিসন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী বিএনপি-জামায়াতকে উপযুক্ত জবাব দেবেন। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে কেবল নিজে নয়, পরিবার-পরিজন নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

ফরিদপুর, মাগুরা ও রাজবাড়ী জেলার নির্বাচনী আসনের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকা মার্কার প্রার্থীদের আপনাদের দিয়ে গেলাম। তারা আপনাদের সেবা করবে, আসনবাসীর সেবা করবে। আপনারা তাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা ওয়াদা করেন নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকার প্রার্থীদের নির্বাচিত করবেন। এসময় টাকা দিয়ে ভোট কেনা যায় না, টাকা দিয়ে মানুষকে কেনা যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

‘তরুণ সমাজ বা তারুণ্যই হচ্ছে উন্নয়নের অগ্রদূত’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের ভোট প্রত্যাশা করেন এবং অন্যান্য নির্বাচনী জনসভার মতো প্রথমবারের মতো ভোটারদের নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন