বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন আদালত। আগামী ২১ অক্টোবর এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শুনানির জন্য এই দিন ধার্য করেন।

আজ সকালে এ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের রিভিউ শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। এ নিয়ে কার্যকর সমাধান চায়, যাতে এটা বার বার বিঘ্নিত না হয়। এ সময় তিনি প্রশ্ন তোলেন যদি তত্ত্বাবধায়ক ফিরিয়ে দেই তবে এটি কবে থেকে কার্যকর হবে?

অন্যদিকে শুনানিতে রায়ের পর কীভাবে কার্যকর হবে, সে বিষয়ে আপিল বিভাগ জানতে চাইলে নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আপিল বিভাগ পর্যবেক্ষণ দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রিভিউ শুনানিতে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠলে, এর উত্তর দিতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে অনুরোধ করেন প্রধান বিচারপতি।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গেল দেড় দশকে দেশের মানুষ শাসিতের পরিবর্তে শোষিত হয়েছে নানাভাবে। মানুষ গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যেসব সিস্টেম ছিল সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং মানুষ বিচার পায়নি। যার কারণে এই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। আর সেই রাজপথ থেকেই নির্ধারিত হয়েছে কে প্রধান বিচারপতি হবেন আর কে সরকার প্রধান হবেন। জনগণের এই ক্ষমতাকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। এসব অবজ্ঞা করলেই বিপ্লবের সৃষ্টি হয়। এ সময় ’৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন তিনি।


তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশকিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। এরপর ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।


গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ