রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে: রিজভী

বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে: রিজভী

গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পক্ষপাতমূলকভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ৭ নভেম্বর প্রজন্ম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী এ মন্তব্য করেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পক্ষপাতমূলকভাবে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আজকের এই বাস্তবতায় বলা হচ্ছে, অমুক খারাপ, আমরা ভালো। যখন ভালো-মন্দ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, বালুমহলের সঙ্গে বিএনপির লোক জড়িত, তখন জামায়াতের লোকও জড়িত আছে। সেটাও গণমাধ্যমে আসছে, তবে ফলাও করে প্রচার হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সিলেটের পাথর উত্তোলনে জামায়াত নেতার নাম পাওয়া যায়, নারীঘটিত বিভিন্ন ঘটনাতেও নাম পাওয়া যায়, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধু বিএনপি বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু বিএনপি তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা তো ফলাও করে প্রচার করেন না। আমরা যে তাদের পদ স্থগিত করছি, বহিষ্কার করছি সেটা তো বলছেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমারসেট মমে বিখ্যাত উক্তি, এভরি ফ্যামিলি হ্যাজ অ্যা ব্ল্যাক শিপ। রাজনৈতিক দলগুলোকেও যদি আমরা একটি পরিবার মনে করি, তবে তাতে কিছু কুলাঙ্গার থাকতে পারে। কিন্তু সেই দল বা পরিবার যদি কুলাঙ্গারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তবে সেই পরিবারই সবচেয়ে ভদ্র এবং যথার্থ। এসব গণমাধ্যমে আমরা দেখি না। আমরা দেখি, খুব কায়দা করে একটা বয়ান তৈরি করে বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হল সংসদের নবনির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) এক দোকানিকে জরিমানা করার ঘটনার ইঙ্গিত করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতিতে যা ঘটছে, আপনারা সব দেখছেন। একজন ভিপি হয়েছেন, কিন্তু তাকে কি ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কে দোকান করছে কে মার্কেট করছে এটা তো ইউনিভার্সিটির প্রশাসন আছে, তারা ব্যবস্থা নিতে পারে। সেখানে ছাত্রনেতা শুধু অভিযোগ করতে পারেন। কিন্তু আপনি গিয়ে ফাইন করে দিচ্ছেন, সেই টাকা যাচ্ছে জামায়াতের বায়তুল মালে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে দলের পক্ষ থেকে লোহার খাট দেওয়া হচ্ছে। এটা তো অদ্ভুত ব্যাপার! এটা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন বা ডাকসুর দায়িত্ব নয়। ছাত্রদের থাকার সমস্যা থাকলে আন্দোলন করে প্রশাসন থেকে সেটার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এটা তো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা কাজ। এটা কি এতিমখানা নাকি, যে আপনি সেখানে লোহার খাট দেবেন, খাওয়ার জন্য ডাইনিং টেবিল দেবেন? এই জিনিসগুলো খুব খারাপ লক্ষণ বলে মনে হচ্ছে।’


প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একটি দোকান থেকে টেস্টিং সল্ট (এমএসজি) পাওয়ায় হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক দোকানিকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন। টেস্টিং সল্টের বিষয়ে প্রথমে দোকানদার অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে খাবারে তা মেশানোর কথা স্বীকার করেন। 


এ সময় ভিপির পক্ষ থেকে দোকানদারের সঙ্গে একটি লিখিত চুক্তিনামা স্বাক্ষরিত হয়, যাতে তিন দিনের মধ্যে জরিমানা না দিলে দোকানের চুক্তি বাতিলের সুপারিশ করার কথা উল্লেখ ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ এই ঘটনায় আপত্তি জানিয়ে বলেন, জরিমানা করার এখতিয়ার ছাত্রনেতাদের নেই। এ ধরনের সিদ্ধান্ত হলে অবশ্যই হল প্রশাসনের মাধ্যমে করতে হবে।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ