শিগগিরই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মহাসড়কের তিনটি পয়েন্টে চেকপোষ্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনার সময় নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, শিগগিরই মহাসড়কের মূল সড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে, এই বিষয়ে প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। তবে নিয়ম মেনে মহাসড়কের পাশে সার্ভিস লেনে চলতে পারবে মোটরসাইকেল। কারণ গত এক বছরের মহাসড়কের দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী সব থেকে বেশি দুর্ঘটনা স্বীকার হয়েছে মোটরসাইকেল চালক ও যাত্রীরা। যার সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশেরও বেশি।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে যৌথ এই অভিযানে বিআরটিএ’র সঙ্গে ছিল হাইওয়ে পুলিশ। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মহাসড়কের তিনটি পয়েন্টে চেকপোষ্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনার সময় বিআরটিএর এক্সেকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শিফা নুসরাতসহ হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় অতিরিক্ত গতি, ওভার ট্রাকিং ও হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে যাত্রীবাহী বাসের চালক এবং প্রাইভেটকারসহ ১১টি যানবাহনকে ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান জানান, মহাসড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপে যাচ্ছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায়। শিগগিরই সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হবে মহাসড়কে। এছাড়া প্রথম দিনের অভিযানে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে যাত্রী ও পথচারীদের অনীহা ও যানবাহনের ওভার ট্রাকিং সহ অতিরিক্ত গতিতে চলাচলের চিত্র চোখে পড়েছে ফলে দ্রুত এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে যানবাহন ও চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্থায়ীভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, মহাসড়কে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা শিকার হয়েছেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। ফলে শিগগিরই মহাসড়কে হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে। এছাড়া স্প্রিট গানের মাধ্যমে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্তে মহাসড়কে বৃদ্ধি করা হচ্ছে হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি।
এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক জানান বিআরটিএর চেয়য়ারম্যান (গ্রেড-১) অতিরিক্ত সচিব নুর মোহাম্মদ মজুমদার ও হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বিআরটিএ-র সদর কার্যালয়ের আদালত-০৪ এর ম্যাজিস্ট্রেট শিফা নুসরাত এসব অভিযান পরিচালনা করেন। এসময়ে মহাসড়কে ৯৫ থেকে ১১৫ গতিতে যেসব যানবাহন চলাচল করে সেগুলোতে জরিমানার করা হয়েছে। এতে ১১ টি যানবাহন থেকে মোট ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ঢাকা-মাওয়া-ভাংগা মহাসড়কে যানবাহনের দ্রুত গতির কারণে সড়ক দূর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রাণহানীসহ পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অসংখ্য মানুষকে। এটিকে গুরুত্ব দিয়ে এমন জোরালো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।