রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

কিশোরগঞ্জে বিলাতি ধনিয়া পাতায় লাভবান কৃষক

কিশোরগঞ্জে বিলাতি ধনিয়া পাতায় লাভবান কৃষক

বিলাতি ধনিয়া বা বন ধনিয়া বা চাটনি পাতার বৈজ্ঞানিক নাম Eryngium foetidum (এরিঞ্জিয়াম ফোটিডাম)। এটি ‘কুলান্ট্রো’ নামেও পরিচিত এবং এর সুগন্ধি পাতা চাটনি ও অন্যান্য খাবারে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে কিশোরগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এই পাতা। ভালো ফলন, বাজারে প্রচুর চাহিদা এবং ভাল দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। কৃষি বিভাগ জেলার সব উপজেলায় বিলাতি ধনিয়া পাতার চাষ দ্রুত ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে। 


কিশোরগঞ্জের সদরসহ ১৩ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চাষ হচ্ছে বিলাতি ধনিয়া পাতা। ক্ষেতে থাকা এ পাতার দৃশ্য দেখতেও মনোরম। গেলো কয়েক বছর ধরে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। এই পাতার ফলন পাওয়া যায় নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। সাধারণত কৃষকরা আগস্ট মাসে জমিতে বীজ বপন করেন। 


কিশোরগঞ্জে চলতি বছর ৪৫০ হেক্টর জমিতে বিলাতি ধনিয়ার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮৫ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৬ কোটি টাকার বেশি।


বিলাতি ধনিয়া পাতা অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষিদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ঢাকা-সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে প্রচুর চাহিদা রয়েছে এই ধনিয়া পাতার।


করিমগঞ্জ উপজেলার চরসুতারপাড় গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন ভূইয়া বলেন, “আগে তো বুঝতাম না এই পাতার রহস্য। প্রথমে নিজেরা খাওয়ার লাইগ্যা (জন্য) বাড়ির আশ-পাশেই বীজ বুনন করতাম। আর অহন দেখি, বাজারে এর অনেক চাহিদা। তাই ব্যবসার লাইগ্যা (জন্য) ক্ষেত্রে বিলাতি ধনিয়া পাতার চাষ শুরু করছি। এটা খুবই লাভজনক, চার পাঁচ বছর ধইরাই করতাছি। আমার চাষ দেইখ্যা (দেখে) অনেকেই চাষ শুরু করছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই পাতা চাষের সুবিধা হলো-এটা বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। ব্যাপারী এসে ক্ষেত থেকেই কিনে নিয়ে যায়। এবার তিন একর জমিতে এ পাতা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা, আশা করছি, ৬ লাখ টাকার ওপরে বিক্রি হবে।”



সদর উপজেলার কলাপাড়া গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, “আমি প্রথমে চার শতক জমিতে ধনিয়া পাতা চাষ করেছিলাম। দেখলাম, লোকসান নাই। খুব ভালো লাভবান হয়েছি। এবার ৫০ শতক জমিতে চাষ করেছি, খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। বিক্রি হয়েছে চার লাখ টাকার। বাকি ধনিয়া পাতা বেপারিরা এসে নিয়ে যাবেন।”

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ