এশিয়া কাপে নিজেদের ভাগ্যকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬ উইকেটে হারের মধ্য দিয়ে দলের টিকে থাকার সমীকরণ এখন হয়ে পড়েছে আরও জটিল।
আবুধাবির আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে শনিবারের ম্যাচে বাংলাদেশের শুরুটা যেন দুঃস্বপ্নের মতো। প্রথম দুই ওভারেই রান শূন্য, অথচ উইকেট গেছে ২টি! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এ ধরনের সূচনা ঘটেছে মাত্র তৃতীয়বার। নুয়ান তুষারা ও দুষ্মন্ত চামিরার ওই দুই ওভারই যেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে ফেলেছিল। প্রথম রান তুলতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৪ বল।
অধিনায়ক লিটন দাস চেষ্টা করেছিলেন ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দেওয়ার, তবে তার ২৬ বলে ২৮ রানের ইনিংসটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। একের পর এক ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফেরায় ষষ্ঠ ওভারে স্কোর দাঁড়ায় ৫৩ রানে ৫ উইকেটে। তখন মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ দ্রুতই গুটিয়ে যাবে।
কিন্তু জাকের আলী ও শামীম হোসেনের ব্যাটে পাল্টে যায় চিত্র। দুজনের রেকর্ড জুটিতে ৬১ বলে আসে ৮৬ রান। ৬ উইকেট হাতে রেখেই পুরো ২০ ওভার খেলেছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে ভেসে ওঠে ৬ উইকেটে ১৩৯ রান। যদিও টি-টোয়েন্টিতে এমন রান নিয়েও জয় সম্ভব, তবু লঙ্কান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেটি যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি।
জয়ের জন্য লড়াইয়ে নামার পর বাংলাদেশের বোলাররা শুরুতে আশার সঞ্চার করেছিলেন। মোস্তাফিজুর রহমান দ্বিতীয় ওভারেই ফিরিয়ে দেন কুশল মেন্ডিসকে। তবে এরপরই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় পাতুম নিশাঙ্কা ও কামিল মিশারার ৯৫ রানের জুটি। নিশাঙ্কা মাত্র ৩৪ বলে করেন ৫০ রান। মিশারা জীবন পাওয়ার পর অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করেন ৩২ বলে ৪৬ রানে, যেখানে ছিল ৪টি ছক্কা ও ২টি চার।
বাংলাদেশ বোলাররা শেষ দিকে আরও দুটি উইকেট নিলেও তা কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৪.৪ ওভারেই ১৪০ রান তুলে ৬ উইকেট হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কা। ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন কামিল মিশারা।
এই হারে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা এখন অনিশ্চিত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে শুধু জয় পেলেই হবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যান্য সমীকরণের দিকেও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৯/৫ (শামীম ৪২*, জাকের ৪১*, লিটন ২৮;
হাসারাঙ্গা ২/২৫, তুষারা ১/১৭, চামিরা ১/১৭)।
শ্রীলঙ্কা: ১৪.৪ ওভারে ১৪০/৪ (নিশাঙ্কা ৫০, মিশারা ৪৬*; মেহেদী ২/২৯,
তানজিম ১/২৩, মোস্তাফিজ ১/৩৫)।
ফলাফল: শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: কামিল মিশারা।