জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জাহানারা ইমাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুরশেদা বেগম পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় তিনি ইমেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
এর আগে, রাত ১১টায় নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে হল প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাশেদুল আলম। তিনি শিক্ষার্থীদের হল প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন বলে জানান এবং আবাসিক এলাকায় স্লোগান না দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেন। তবে শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার দাবি জানান। তখন একজন সহকারী প্রক্টর প্রভোস্টের বাসায় গেলে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
তবে শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের জবাবদিহি না পেলে হলে ফিরে যাবেন না, এমন দাবি করেন। একপর্যায়ে রাত ১২টায় সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে অধ্যাপক মুরশেদা ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’
তবে শিক্ষার্থীরা এসময় কেবল পদত্যাগই তার অপরাধের সমাধান নয় বলে দাবি করেন এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্তের জন্য দাবি জানান। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো শোনেন ও পনেরো দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেন এবং তাদের লিখিত আকারে অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ড. মুরশেদার স্বামী সোহলে পারভেজ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি জুলাই গণহত্যার আসামি। তার স্বামী এখন তার বাসায় লুকিয়ে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কি সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়ার জায়গা? তিনি ও তার স্বামী উভয়ই ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী। তিনি শুধু পদত্যাগ করে দায় এড়াতে পারবেন না। তার সকল দুর্নীতির তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
প্রভোস্টর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ফ্যাসিস্টের সহযোগীর মতো আচরণ করা ও মেয়েদের আন্দোলনে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়া। আন্দোলন চলাকালে অযৌক্তিকভাবে রাতে মেয়েদের হল থেকে বের করে দেয়া। প্রভোস্ট থাকাকালীন অনৈতিকভাবে বোনকে হল সুপার পদে নিয়োগ দেয়া ও হলের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা যথাযথভাবে ব্যয় না করা।