বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

আদালত প্রাঙ্গণে বাশারকে কিল-ঘুষি ও ডিম নিক্ষেপ

আদালত প্রাঙ্গণে বাশারকে কিল-ঘুষি ও ডিম নিক্ষেপ

আদালত প্রাঙ্গণে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারকে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরেছেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় তার ওপর ডিমও নিক্ষেপ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে।

এদিন দুপুর ১টার দিকে খায়রুল বাশারকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। এ সময় বাশারের কাছে প্রতারিত হওয়া শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা আদালতে হাজির হন এবং তার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

 দেখা যায়, ভুক্তভোগীদের চাপে বাশারকে আদালতে তুলতে অনেক বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এ সময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়। বিকাল সোয়া ৩টার দিকে হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলার জন্য বের করা হয় বাশারকে। সিএমএম আদালতের গেটে পৌঁছামাত্রই তার ওপর ডিম নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে তাকে দ্রুত সিএমএম আদালতের তৃতীয় তলায় অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহর আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পথে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা ভুক্তভোগীরা বাশারকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন।

এরপর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। বাদীপক্ষে আইনজীবী জামাল উদ্দিন খন্দকার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। এরপর আদালত তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত বছরের ১৭ অক্টোবর ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান মো. খায়রুল বাশার বাহার এবং তার স্ত্রীসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাশারসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি রুমন আলী লস্কর বলেন, ‘কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা আদায় করে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক। এসব অর্থ বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রাপক প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর কথা থাকলেও, প্রতিষ্ঠানটি তা না করে অবৈধভাবে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে।’


অভিযোগ করে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভুয়া অফার লেটার দিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের তথ্যমতে, গড়ে প্রতিটি শিক্ষার্থী থেকে ২০ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়। বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের নিজস্ব তালিকা অনুযায়ী, প্রায় ৮৫০ শিক্ষার্থীর নাম রয়েছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা এক হাজারের বেশি বলে দাবি তাদের।

ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী জানান, ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট বাশার ও শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদলের মধ্যে স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তি হয়। যাতে বলা হয়, তিনি তিন কিস্তিতে যথাক্রমে ২৩ সেপ্টেম্বর, ২২ অক্টোবর এবং ২৫ নভেম্বর পাওনা টাকা ফেরত দেবেন।তবে প্রথম কিস্তির দিন অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর কোনো টাকা পরিশোধ না করে বাশার তার গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় গুলশান থানা পুলিশ অবগত রয়েছে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন ভুক্তভোগীরা।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ