তিলোত্তমা
-সাবেরা সুলতানা সুমী
তিলোত্তমা হ্যাঁ এ নামেই ডেকেছো একদিন আমায়,
সেই যে রেলওয়ে জংশনে প্রথম দেখা তোমার সঙ্গে
ভুল করেই কি করেছিলে ভুল?
বলেছিলে, "সরি ঠিক আমার তিলোত্তমা ভেবেছি।"
"ইটস ওকে" বলেই বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজেছি
আমার মনের চোখে দেখছিলাম;
চশমার ভেতর ঐ দুষ্টুমীভরা চঞ্চল চোখ দেখছিলো আমায়।
আসলে ছিলো না কেউ ও নামে
বলেছিলে পরে কাছে আসার গল্পে!
দূর থেকে ফলো করে ভেবেছিলে
এমন দুষ্টমী করবে তুমি আর দেখবে;
মেয়েটা ভড়কে গিয়ে কি বলে?
কী দুষ্টুমি ছিল মনে চোখেও ছিল একরাশ মুগ্ধতা
অমন কেন তুমি?
তারপর দু'জনে একই ট্রেনে গন্তব্যে পৌঁছা।
কথা তেমন হয়নি আমাদের আবার হয়েছে ও
চোখে চোখে আর মনে মনে মুখে শুধুই
দুজনের নম্বর বিনিময় আর ঠিকানাটা।
গভীর সুনীল চোখ তুলে একবার বলেছিলে,
"এই মেয়ে খাবে কিছু?"
তুমি সম্বোধন শুনে আড়ষ্টতা নিয়ে বলিনি কিছু।
ভালো লেগেছিলো তোমার সরলতা আর বিশ্বস্ততা
সাথে বোনাস স্মার্টনেসে চৌকষ তুমি!
জানতাম না দেখা না হলে তুমি আমি কতটা
কাছাকাছি থেকেছি এতোটা বছর!
অথচ দেখো কিভাবে পরিচয় হলো আমাদের?
পাশাপাশি গ্রামেই ছিল বাস আমাদের
আশ্চর্য হয়েছি এতোদিন হয়নি কেন দেখা?
জীবনের তাগিদে শহরে বাস
নাড়ীর টানে ঘরে ফেরার পথেই দেখা।
আরো কত শতবার দুজনের এই শহরে
হয়েছে দেখা মনে আছে?
রবীন্দ্র সরোবরে প্রথম রেখেছিলে হাতে হাত
বর্ষাবরণ ছিল সেদিন কদম দিয়ে বলেছো
"ভালোবাসাটা দিও শুধু কিচ্ছু চাইনা আর।"
মুগ্ধ হয়েছি তোমার প্রকাশে।
হ্যাঁ মন তো দিয়েছি আগেই তোমার ঐ হৃদয়ে
ভালোবাসা ছাড়া ছিল না কিছু যে আমার
উজাড় করে তাই ভালোবাসাটা দিয়েছিলাম।
পুরো শহর জুড়ে স্মৃতি তোমার আমার।
কোনটা রেখে কোনটা বলি?
ছুটির দিনে বাইকে দূরে অজানা পথে
গিয়েছি কত হাওয়ায় উড়িয়ে চুল
তোমার ভাল্লাগতো খোলা চুলের গন্ধটা।
ইচ্ছে করতো মিশে যাই তোমার পারফিউমে
আমিই যদি হতাম তোমার প্রিয় সেই ব্র্যান্ড?
নদীর ধারে বসে কাটিয়ে দিয়েছি কত অলস সময়।
কথার মালা গেঁথে স্বপ্ন বোনা শিখেছি তোমার কাছেই!
এতো সুখ কি আর কপালে সইবে বলো?
ঝড়ের মতো এলো তোমার জীবনে অন্য কেউ
কি নামে ডাকো তাকে তিলোত্তমাই কি?
সরিয়ে দিয়েছো আমায় মন থেকে
আমি কিন্তু রেখেছি খুব যতনে তোমায়।
বুনোফুলের মাঝে ও খুঁজে ফিরি
আমার ভালোবাসার সেই প্রিয় মুখ
না আমি দেইনি কোনও নাম তোমার
শুধু ভালোবাসাটা থাক না আমার একান্তই আমার!