রীতিমতো অসাধ্যকে সাধন করলেন অজি ক্রিকেটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল! কাবুলিওয়ালাদের দেয়া ২৯২ রান তাড়া করতে নেমে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের প্রহর গুনছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে রূপকথার হ্যারিপটারের মতো যাদুর কাঠি নাড়িয়ে একাই টেনে তুললেন ক্যাঙ্গারুদের। ইনজুরি নিয়ে খেললেন ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপের সেরা ২০১ রানের ইনিংস।
এরআগে ভারতের মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৯১ রান তোলে আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৯ রান করেছেন ইব্রাহিম জাদরান। অজিদের হয়ে ৩৯ রানে ২ উইকেট শিকার করেছেন জশ হ্যাজেলউড। জবাবে ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৬ ওভার ৫ বলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ২০১ রান করেছেন ম্যাক্সওয়েল।
২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ওপেনার ট্রাভিস হেডকে শূন্য রানে ফেরান নাভীন-উল-হক। এরপর এই পেসারই মিচেল মার্শকে ব্যক্তিগত ২৪ রানে এলবি করেন।
দলীয় নবম ওভারের প্রথম দুই বলে ডেভিড ওয়ার্নার (১৮) ও জস ইংলিসকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এরপর মার্নাস লাবুশানে রান আউটে কাটা পড়েন। আর মার্কাস স্টোইনিস ও মিচেল স্টার্ককে রশিদ খান দ্রুত ফেরালে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে অজিরা। তবে এরপরই শুরু হয় ম্যাক্সওয়েল-প্যাট কামিন্স যুদ্ধ। যদিও এই যুদ্ধের একক নায়ক বলা চলে ম্যাক্সওয়েলকেই। কেননা ১৭০ বলে ২০২ রানের পার্টনারশিপে কামিন্স যে মাত্র ১২ রান করেছেন। বাকি ১৭৯ রানই এসেছে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে। ওয়ানডে চতুর্থ ও এই বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করা এই ডানহাতি শেষ পর্যন্ত ১২৮ বরে ২১টি চার ও ১০টি ছক্কায় ২০১ রানে অপরাজিত থাকেন। এটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি ও সেরা স্কোর।
টস জিতে এর আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করে আফগানিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতে ৮ ওভারে ৩৮ রান তোলেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। অবশেষে গুরবাজকে ২১ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন জস হ্যাজেলউড। তবে লড়াই চালিয়ে যান জাদরান। এই ওপেনার দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রহমত শাহর সঙ্গে ১০০ বলে ৮৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। রহমত ৩০ রান করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের শিকার হন। এরপর জাদরান প্রতিটি উইকেটে ছোট ছোট জুটি গড়ে দলের সংগ্রহ বাড়ান। এ সময় তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরিও। মাঝে আফগান অধিনায়ক শহিদী ২৬ করে মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হন।
অ্যাডাম জাম্পার বলে আউট হওয়া আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২২ রান করেন। শেষ দিকে উইকেটে এসে ঝড় তোলেন রশিদ খান। মাত্র ১৮ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৫ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। আর জাদরান ১৪৩ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২৯ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। অজি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট পান হ্যাজেলউড। এছাড়া একটি করে উইকেট দখল করেন স্টার্ক, ম্যাক্সওয়েল ও জাম্পা। ম্যাচ শেষে নিরপেক্ষ দর্শকদের একটাই তৃপ্তি, সেটা হচ্ছে ম্যাক্সওয়েলের ডাবল সেঞ্চুরি।