❏ পার্বত্য এলাকায় বিমানবাহিনী ❏ উপকূলে কোস্টগার্ড ❏ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার ❏ ৬ জেলায় নৌবাহিনী, থাকছে ৬ যুদ্ধজাহাজ ❏ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সিইসির বৈঠক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতা দিতে ভোটগ্রহণের চার দিন আগে মাঠে নেমেছেন সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা। বুধবার সকাল ৮টা থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের জিয়া কলোনী ও সৈনিক ক্লাব থেকে সেনা সদস্যরা মাঠে নামেন; মহাখালী, নাবিস্কো ও তিব্বত হয়ে তাদের গাড়িবহর ছুটতে দেখা যায়।
সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখা যায় মালিবাগ ও খিলগাঁও এলাকাতেও। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে তারা মাঠে থাকবেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার ‘নোডাল পয়েন্ট’ ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাহিনীসমূহ এলাকাভিত্তিক মোতায়েন সম্পন্ন করবে।
এদিকে বিএনপিসহ সমমনা কয়েকটি দলের নির্বাচন বর্জনের মধ্যেও জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। লড়াইটা হচ্ছে মূলত আওয়ামী লীগ ও নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। প্রচার-প্রচারণা কেন্দ্র করে এরই মধ্যে বেশকিছু সংঘাতের খবর মিলেছে। বিরোধীদের ভোট বর্জনসহ অসহযোগের হুমকি তো আছেই। তাই সহিংসতার বিষয়ে সজাগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে মাঠে থাকবে র্যাব, পুলিশ, আনসার, বিজিবি, কোস্টগার্ড, এপিবিএনের সাড়ে সাত লাখ ফোর্স। ভোটের আগে-পরে ১৩ দিন থাকবে সেনাবাহিনী।
অন্যদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় জেলার ১৯টি উপজেলায় নৌবাহিনীর ছয়টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন থাকবে।
উপকূলীয় দুটি জেলাসহ (ভোলা ও বরগুনা) ১৯টি উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবে নৌবাহিনী। সমতলে সীমান্তবর্তী ৪৫টি উপজেলায় বিজিবি এককভাবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী ৪৭টি উপজেলায় সেনাবাহিনী বিজিবির সঙ্গে এবং উপকূলীয় চারটি উপজেলায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবে।
অপরদিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পার্বত্য অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় হেলিকপ্টার সহায়তা দেবে। জরুরি প্রয়োজনে বিমান বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথ সমন্বয় সেল স্থাপন করা হয়েছে, যা ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। আগামী ৭ জানুয়ারি হবে ভোটগ্রহণ। ভোটের আগের চারদিন, ভোটের দিন ও পরের তিন দিন পর্যন্ত মাঠে কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী।
এদিকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বৈঠকটি শুরু হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে চার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল অফিসার, আইজিপি, র্যাব, আনসার ও বিজিবির মহাপরিচালক অংশ নিয়েছেন। বৈঠকে ইসির পক্ষ থেকে নির্বাচনের দিন যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা ঠেকাতে এবং ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আলোচনা করা হয়েছে।
একইসঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে সারাদেশের নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয়। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ইসিকে এখন পর্যন্ত নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে অবিহিত করা হয়েছে। ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা।