এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় স্টেডিয়ামে হংকং চায়নার বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ দল। হামজা চৌধুরীর গোলে ম্যাচে লিড নিয়েছে বাংলাদেশ।
ম্যাচের শুরু থেকে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে হংকং। তবে কিছুটা সময় নিয়ে নিজেদের গুছিয়ে নেয় স্বাগতিকরা। এরপর আক্রমণে উঠে বাংলাদেশ।
ম্যাচের ১১ মিনিটে কর্নার পায় বাংলাদেশ। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। এরপর ১২ মিনিটে ডি বক্সের বাম পাশে ফয়সাল আহমেদকে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায়। সেখান থেকে অসাধারণ ফ্রি কিকে বল জালে জড়ান হামজা চৌধুরী।
বাংলাদেশের জার্সিতে এটি হামজার দ্বিতীয় গোল। ভুটানের বিপক্ষে প্রথম গোল করেছিলেন তিনি। হামজার গোলে ম্যাচে লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা।
গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হার বাংলাদেশ দলের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছিল। প্রবাসী ফুটবলার হামজা দেওয়ান চৌধুরীসহ বিদেশফেরত খেলোয়াড়দের আগমনে দর্শকদের মধ্যে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, সেই ধারাটা থেমে গেলেও এবার তা আবারও ফিরে এসেছে।
টিকিট ছাড়ার আধাঘণ্টার মধ্যেই প্রায় ১৯ হাজার টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে, যা ম্যাচটি ঘিরে দর্শকদের আগ্রহের প্রমাণ।
তবে মাঠের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে কঠিন সমীকরণ মেলাতে হচ্ছে। ‘সি’ গ্রুপে ভারতের বিপক্ষে ড্র দিয়ে শুরু করেছিল হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল, এরপর নিজেদের মাঠে হেরে যায় সিঙ্গাপুরের কাছে। ফলে ২ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে জামাল ভূঁইয়ার দল এখন তৃতীয় অবস্থানে। হংকং ও সিঙ্গাপুর উভয়েই ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে।
আজ বাংলাদেশ জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ৪, ড্র করলে ২ এবং হারলে ১–ই থাকবে। এরপর ভারতের বিপক্ষে লড়াইসহ বাকি ম্যাচগুলো হবে প্রতিপক্ষের মাঠে—যা দলের জন্য আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ শেষবার এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলেছিল ১৯৮০ সালে। ৪৫ বছর পর ফের সেই স্বপ্ন পূরণে আজ জয় ছাড়া বিকল্প নেই।
তবে পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষে নয়। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে হংকং চায়না ৩৮ ধাপ এগিয়ে, আর এখন পর্যন্ত চারবার মুখোমুখিতে তিনবার জিতেছে হংকং, একটি ড্র। দলে আছে চারজন ব্রাজিলিয়ান প্রবাসী ফুটবলারও। তবু মাঠে আত্মবিশ্বাসী হয়ে খেলছে বাংলাদেশ দল।
সবশেষে লাল-সবুজ সমর্থকদের একটাই প্রত্যাশা—হামজা-জামালদের পায়ে ফুটুক জয়ের ফুল, বেঁচে থাকুক এশিয়ান কাপের স্বপ্ন।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে হোম ম্যাচের একাদশে বাংলাদেশের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা সামিত সোমকে রাখেননি। সামিত গত মঙ্গলবার রাতে এসে একটি অনুশীলন সেশন পেয়েছিলেন, কিন্তু প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি। প্রথম একাদশে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও নেই।
গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন মিতুল মারমা। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মণকে ২৩ জনের স্কোয়াডে রাখা হলেও ইনজুরির কারণে একাদশে নেই, তার স্থলে শাকিল আহাদ তপু সেন্ট্রাল ডিফেন্সে তারিক কাজীর সঙ্গে খেলবেন। দুই ফুলব্যাক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তাজ ও সাদ।
প্রবাসী জায়ান আহমেদ অ-২৩ দলে ভালো খেললেও প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি। মিডফিল্ড নেতৃত্ব পাচ্ছেন সোহেল রানা। মিডফিল্ডে হামজা দেওয়ান চৌধুরি এবং আরেক মিডফিল্ডার সোহেল রানা খেলবেন। এক উইংয়ে ফাহিম এবং অপর উইংয়ে অধিনায়ক সোহেল রানা থাকবেন। কোচ ক্যাবরেরা ৪-৪-২ ফরমেশনে ফিরেছেন। ফরোয়ার্ড হিসেবে রাখা হয়েছে রাকিব হোসেন ও শেখ মোরসালিনকে।
১০ জুন ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের একাদশের তুলনায় হংকং ম্যাচে পাঁচজন পরিবর্তিত হয়েছেন: তপু বর্মণ, সামিত সোম, কাজেম, ফাহমিদুল ও হৃদয় নেই। স্কোয়াডে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারদের পর্যাপ্ত ব্যাকআপ না থাকার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
বাংলাদেশ একাদশ: মিতুল মারমা (গোলরক্ষক), তারিক কাজী, শাকিল আহাদ তপু, সাদ উদ্দিন, তাজ উদ্দিন, হামজা চৌধুরি, মো. সোহেল রানা, সোহেল রানা, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, মোরসালিন, রাকিব হোসেন।