শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

তৃণমূলে বাড়ছে সহিংসতা

তৃণমূলে বাড়ছে সহিংসতা

❏ নাটোরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তরুণকে কুপিয়ে হত্যা ❏ শরীয়তপুরে রাতের অন্ধকারে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ❏ মুন্সিগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৭

আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মোট ১ হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। নির্বাচনী আমেজে সরগরম হয়েছেন বিভিন্ন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। যদিও এ নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। তবে বিক্ষিপ্তভাবে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাদের বেশ কিছু নেতাকর্মী অংশ নিয়েছে বলে জানা গেছে। নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় চলমান উত্তেজনা কোথাও কোথাও সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। এরফলে হামলা মারামারি সংঘর্ষ অগ্নিসংযোগ এমনকি হত্যাকাণ্ডও সংঘটিত হচ্ছে।

এরমধ্যে নাটোরে মঙ্গলবার দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিশির হোসেন (২৩) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। একইদিন দুপুরে মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৭ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। এরআগেরদিন রাতে শরীয়তপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে পুরো কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আমাদের নাটোর সংবাদদাতা জানান, পূর্ববিরোধের জেরে নাটোরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিশির হোসেন (২৩) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে নাটোর পৌরসভা চত্বরের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। নাটোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোকনুজ্জামান হিরো ও যুবলীগ কর্মী ঠিকাদার হাসানুর রহমান ওরফে হাসুর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

নিহত শিশির শহরের কান্দিভিটা এলাকার মোজাহার আলীর ছেলে। তিনি কাউন্সিলর রোকনুজ্জামানের অনুসারী ছিলেন। ঘটনার পর থেকে শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শরীয়তপুরে বালাখানা নামক স্থানে দীর্ঘদিন যাবত একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। কয়েক দিন আগে স্থানীয় কিশোরদের মধ্যে মোটরসাইকেল সাইড দেয়া নিয়ে হাতাহাতি হয়। বিষয়টি স্থানীয়রা মীমাংসা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে সোমবার দিবাগত রাতে কে বা কারা কার্যালয়টিতে আগুন দেয়। রাত গভীর হওয়ায় কেউ টের না পেলেও সড়কে চলাচলকারী গাড়ি চালকরা ডাকাডাকি করলে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে আশপাশের কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না হলেও কার্যালয়ে থাকা চেয়ার, টেবিল, টিভিসহ পুরো ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সকালে ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয়টি পরিদর্শনে এসে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

মুন্সীগঞ্জের ঘটনায় পুলিশ জানায়, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জেরে মোল্লকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারীর অনুসারী বাহাদুর মিয়া ও ইউপি সদস্য ডলি বেগম গ্রুপের সঙ্গে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহসিনা হক কল্পনার অনুসারী বাবু কাজী, শওকত ও ইউপি সদস্য সুমা গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এর জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকে দু’পক্ষ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে।

এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে উভয় পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ সংঘর্ষ ধীরে ধীরে ইউনিয়নের ঢালীকান্দি, মুন্সীকান্দি ও উত্তর বেহেরকান্দি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময়ও হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৭ জন আহত হন।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন