শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

রাজধানীর কালশীতে সংঘর্ষ ভাঙচুর আগুন

ছবি: সংগৃহীত

❏ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ রিকশাচালকদের ❏ নিরাপত্তার স্বার্থে মেট্রোরেলের দুটি গেট বন্ধ

❏ বন্ধের নির্দেশনা না মানলে ব্যবস্থা: বিআরটিএ

রাজধানীর কালশীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সেখানে একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছেন রিকশাচালকরা। এ সময় অন্তত ৩টি বাস ভাঙচুর করেন তারা। এদিকে মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনের দুটি গেট বন্ধ করে রেখেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে এমআরটি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ খান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রিকশাচালকরা হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। সকাল থেকে এই অবস্থার কারণে এমআরটি পুলিশও নিরাপত্তা জোরদার করেছে মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশনে।

অন্যদিকে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান এবং এ ধরনের তিন চাকার যান চলাচল বন্ধে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ। বিজ্ঞপ্তিতে বিআরটিএ বলছে, “ব্যাটারি বা মোটরচালিত রিকশা বা ভ্যান বা এ জাতীয় থ্রি-হুইলার ঢাকা মহানগরীতে চলাচলের কারণে সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী ব্যাটারি/রিকশা বা ভ্যান বা এ ধরনের থ্রি-হুইলার এবং ফিটনেসের অনুপযোগী, রংচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়ঝক্কড় মোটরযান চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অবস্থায় ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারি/রিকশা বা ভ্যান বা এ ধরনের থ্রি-হুইলার এবং ফিটনেসের অনুপযোগী, রংচটা, জরাজীর্ণ ও লক্কড়ঝক্কড় মোটরযান চালানো বন্ধ করার অনুরোধ করা যাচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কালশী মোড়ে রিকশাচালকরা পুলিশ বক্সে আগুন দেন। কালশী ফ্লাইওভার অবরোধ করে রাখা রিকশাচালকদের সরিয়ে দিতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জ শুরু করলে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে মিরপুর গোলচত্বর এলাকায় সকালে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন চালকেরা। এ সময় ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর বিকেল ৩টার দিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে রিকশাচালকরা কালশী এলাকায় সংগঠিত হয়ে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ ধাওয়া দিলে রিকশাচালকরা পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন।

পল্লবী ফায়ার স্টেশনের গুদাম পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। সেখানে রিকশাচালকদের বাধার মুখে পড়েন ফায়ার ফাইটাররা। বিকেল পৌনে ৬টার দিকে কালশী এলাকা দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। তবে মূল সড়কের পাশের গলিগুলো থেকে রিকশাচালকরা গাড়ি দেখলেই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছেন। পুলিশ সদস্যরা বাউনিয়া বাঁধের কাছে অবস্থান নিয়েছেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেছিলেন, “ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।”

বিদ্যুৎচালিত তিন চাকার যানগুলো অটো, ইজিবাইকসহ নানা নামে পরিচিত। দুর্ঘটনার জন্য সড়কে মোটরবাইক এবং ইজিবাইকের চলাচলকে দায়ী করেন তিনি। বিআরটিএ ভবনে মন্ত্রীর সঙ্গে ওই সভায় ঢাকার দুই মেয়রও শহরের মধ্যে এসব ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধের বিষয়ে তাদের সম্মতি জানিয়েছিলেন। রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি দিয়েছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির কথা জানায় সংগঠনটি।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন