শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

কর্মবিরতিতে অচল ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

কর্মবিরতিতে অচল ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিমের’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে সোমবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিলে অচল হয়ে পড়েছে দেশে ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এরআগে রোববার সংবাদ সম্মেলন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির মোর্চা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।

এ ঘোষণার পর আলাদাভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

ফেডারেশনে কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ইতোমধ্যে ৯টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সেখানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতি অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

এদিকে শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল পরীক্ষা স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে কলাভবন ও কার্জন হল কেন্দ্রের পরীক্ষাগুলো বর্জন করা হয়। তিনি জানান, অন্যান্য পরীক্ষাকেন্দ্রগুলো স্ব স্ব অনুষদ, ইনস্টিটিউটের অধীন। যেহেতু সকল শিক্ষক কর্মবিরতিতে, তাই এটি বলা যায় সেখানেও পরীক্ষা হবে না।

সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, বিভিন্ন কমিটির সভা বর্জন, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধসহ ১০টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তারা।

শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড নিজামুল হক ভুঁইয়া জানান, আমরা সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তারা সবাই কর্মসূচি পালন করবে।

এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, আমরা এই আন্দোলন নিজেদের জন্য করছি না। বরং আগামী প্রজন্মের জন্য করছি। দেশে এত দুর্নীতির কথা আমরা শুনি। সেসব কী শিক্ষকরা করেছে? তাহলে কেন তাদের সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। এই প্রত্যয় স্কিম বৈষম্যমূলক।

উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে ‘প্রত্যয় স্কিম’ এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ব্যবস্থাকে একটি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা বলে শুরু করেই বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনগুলো। দাবি আদায়ে কিছু কর্মসূচি পালনের পর গত ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। এরপরও দাবির বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গত ২৫,২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। পরে ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন