শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

৩০ ঘণ্টা অবরোধে কাকরাইল, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

৩০ ঘণ্টা অবরোধে কাকরাইল, তীব্র যানজটে ভোগান্তি

কাকরাইল মসজিদ মোড়ে টানা ৩০ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে চার দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর ১টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই সড়কের অবস্থান করে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। এতে আশপাশের রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত যমুনা অভিমুখে কাকরাইল মসজিদের সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না বলে জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

জগন্নাথ শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে মৎস্য ভবন থেকে কাকরাইল মোড় এবং মিন্টু রোডে সব যান চলাচল বন্ধ আছে। এই সড়কে চলাচল করা গাড়ি বিকল্প রাস্তায় চলাচল করছে। ফলে মৎস্য ভবন, শাহবাগ, পল্টন, গুলিস্তান, কাকরাইলের সড়কে যানজট দেখা দিয়েছে। 

অন্য দিকে একটু পরপর বৃষ্টির কারণে আশপাশের এই রাস্তাগুলোতে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে এতে ভোগান্তিতে পড়ছে জনসাধারণ। তবে কাকরাইল মোড় দিয়ে জরুরি কোনো গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স আসলে সেটি দ্রুত চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এর জন্য নির্ধারিত রয়েছে কয়েকটি ভলেন্টিয়ার টিমও।


যানজটে ভোগান্তির শিকার জেসমিন আরা নামে এক নারী বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বসে আছি কাকরাইল মোড়ে। গাড়ির চাকা ঘুরছে না হাসপাতালে যাবো আমি। আমার ভাই সেখানে ভর্তি।


যানজটে দুই ঘণ্টা ধরে আটকে থাকা জান্নাতু্ল নাইম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বন্ধু অ্যাকসিডেন্ট করেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আমাকে সেখানে দ্রুত পৌঁছাতে হবে। একই স্থানে ২ ঘণ্টা ধরে আটকে থাকার পর এখন হেঁটে রওনা দিয়েছি।


এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন। আমরা ক্যাম্পাসে ফিরব না।


শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।


বুধবার সকাল ১১ টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। লং মার্চটি গুলিস্তান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসলে সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, গরম পানি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে লং মার্চে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ওপর। এসময় শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ