ঋতু কথন
-সাবেরা সুলতানা সুমী
হলদে নীলের পাখি হবো
বসন্তের মেঘ!
গ্রীষ্মের খরতাপে
নিদাঘ দুপুরের অন্তহীন দহন।
বর্ষার বিলে রঙিন শাপলা
টইটম্বুর নদী দীঘি ভরা জল!
গা ডুবিয়ে এলোকেশে
এপার ওপার ডুবসাঁতারে
যাবো ভেসে কুল কিনারে!
সঙ্গে যাবি?
হাতটি ধরে অচিনপুরে
শিমুল তলির গাঁ?
শরৎকালের নীলাকাশের মেঘের ভেলায়
যাবো ভেসে স্বপ্নপুরীর ঐ দেশেতে
যেথায় আছে মখমলি এক রক্ত রঙিন
মন পবনের বৈঠা বাওয়া ছোট্ট তরী!
সঙ্গে যাবি?
পাল উড়িয়ে দুজন মিলে
চল না আজ যাই হারিয়ে?
হেমন্তের মরা গাঙ্গের কাদাজলে
ম ম করা আমন ধানের গন্ধ নেবো
ফসল কাটা ক্ষেত শুকিয়ে বিছালিরা
করছে খেলা নিরবধি
সুযোগ পেলেই খামচে ধরে পা
ইশশশ কি যে জ্বালা !!
কৃষানীরা ব্যস্ত সবাই ধান মাড়াই
আর ধোঁয়া উঠা গনগনে ঐ গরম আঁচে
সিদ্ধ ধানের সেই পুরনো গন্ধ নাকে বাহ্!
ভোর সকালে রৌদ্র যখন পাখা মেলে
নিকানো ঐ উঠোন জুড়ে ধানের মেলা
কাকতাড়ুয়া বালিকাটি আপনমনে
হেয়ালীতে লাঠি নাড়ে লালজামাটি ঝুলে থাকে!!
শীতের পাতাঝরা দিনে ফলেছে ফসল
দিগন্ত জুড়ে ফসলের মাঠে
সবুজ ঘাসের শিশির ভেজা আইল মাড়িয়ে
সীম, মটরশুটি, বরবটি আর গাজর
লাউয়ের ডগায় শিশির নাচে।
শীতের সকাল খেজুরের রসে
নানান পদের পিঠে আহ্ কি যে মিঠে!
যাবি সঙ্গে
আমার হাতটি ধরে?
গ্রামের মেঠোপথ বেয়ে নগ্ন পায়ে
অবাক চোখে দেখবো দুজন
প্রজাপতি ঘাসফড়িং আর ফিঙের নাচন!!