বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

যাবেন নাকি লাল শাপলার রাজ্যে?

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে সিলেটের ডিবির বিলে শাপলার সৌন্দর্য্য- ইন্টারনেট

ভ্রমণ পিপাসুদের মন সবসময় নতুন নতুন প্রাকৃতিক সৌন্দয্যমণ্ডিত জায়গা খোঁজ করে। তেমনই একটি জায়গা লাল শাপলার রাজ্য। শুনতে অবাক লাগলেও এটি আসলেই একটি রাজ্যের মতো বড় এলাকা জুড়ে শুধু লাল শাপলার সমাবেশ।

বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বের জেলা সিলেট। সেই সিলেট শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে জৈন্তা-খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে জৈন্তাপুর। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে জৈন্তা রাজ্যের রাজা রাম সিংহের স্মৃতিবিজড়িত ডিবি, ইয়াম, হরফকাটা, কেন্দ্রী বিলসহ রয়েছে চারটি বিল।

বিলগুলোকে কেন্দ্র করেই নাম করা হয়েছে ডিবির হাওর। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়ে তুলে লাল শাপলার ডিবির হাওরকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাপলাগুলো ঝিমিয়ে পড়ে। তাই ফুটন্ত শাপলা দেখতে চাইলে সকাল সকাল পৌঁছাতে হবে।

ইট-সুরকির নগরজীবনে প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে অনায়াসেই বেড়িয়ে আসতে পারেন এই শাপলা রাজ্যে।

সিলেট শহরের সোবহানী ঘাট থেকে বাসে করে জৈন্তা বাজার যেতে হবে। সময় লাগবে এক ঘণ্টার মতো। এরপর সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মাত্র ১৫ মিনিটেই যাওয়া যাবে ডিবির হাওর মানে শাপলা রাজ্যে।

যদি সকাল সকাল ডিবির হাওরে পৌঁছুতে পারেন। তবে আপনার মুখ থেকে এমনিতেই বেড়িয়ে আসবে আহ কী সুন্দর! ফুলে ফুলে সাজানো লালগালিচা যেন আপনার অপেক্ষাতেই ছিল। পূব আকাশে সূর্যের আলোকেও হার মানায় বিলের শত–সহস্র রক্তিম লাল শাপলা।

এরপর নৌকা ভাড়া করে তাতে উঠে পড়ুন। নৌকা দিয়ে বিলের মাঝখান ঘুরলেই বুঝতে পারবেন আপনি কতোটা সুন্দর একটি জায়গায় অবস্থান করছেন। বিশেষ করে সূর্যোদয় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লাল শাপলার সৌন্দর্য দৃশ্যমান থাকে। সূর্যের তেজ বাড়লে শাপলাও ঝিমিয়ে পড়ে। শাপলার এই রূপের সঙ্গে রয়েছে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির মিষ্টি কিচিরমিচির ডাক।

স্বাধীন জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজা বিজয় সিংহের সমাধিস্থল, বিলের চারপাশে খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য বিলটিকে আরও আর্কষণীয় করে তুলেছে৷ পাহাড়ের নিচে খাসিয়া সম্প্রদায়ের বসবাস। দূর পাহাড়ে দেখা মিলবে খাসিয়াদের পান-সুপারির বাগান। প্রকৃতির বুকে শিল্পীর তুলিতে আঁকা এ যেন এক নকশিকাঁথা।

যেভাবে যাবেন

সিলেট থেকে সরাসরি সিলেট-তামাবিল সড়কপথে বাস, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা প্রাইভেট কারে যেতে হবে জৈন্তাপুরে। জৈন্তাপুর বাজার থেকে সেই বাহনে করেই দেড় থেকে দুই কিলোমিটার সামনে গেলেই সড়কের ডান দিকে দেখা যাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ডিবির হাওর বিশেষ ক্যাম্প লেখা ছোটখাটো সাইনবোর্ড।

বাসভাড়া নেবে জনপ্রতি ৪০ টাকা। মূল রাস্তা থেকে নেমে ক্যাম্পের পাশ দিয়ে কাঁচা সড়কে এক থেকে দেড় কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাবেন শাপলা রাজ্যে। অথবা চাইলে জৈন্তাপুর বাজারেও নেমে যেতে পারেন। সেখান থেকে অটোরিকশায় করে বিলে পৌঁছাতে ভাড়া লাগবে ১৫০ টাকা।

বিলে নৌকায় ঘোরাঘুরি করতে এক ঘণ্টার জন্য ভাড়া নেবে ৩০০ টাকা। আসা-যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া নেবে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ